Saturday, June 25, 2016

আর্সেনিক দূষণ ও তার প্রতিকার

আর্সেনিক দূষণ

আর্সেনিক দূষণ কনটেন্টেটিতে আর্সেনিক কেন সমস্যা, আর্সেনিক দূষণ এলাকা, আর্সেনিক রোগীর লক্ষণসমূহ, আর্সেনিকে আক্রান্ত হলে করণীয়, আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা, পানির আর্সেনিক পরীক্ষা, আর্সেনিক দূষণমুক্ত করার উপায় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বলা হয়েছে

আর্সেনিক ছোঁয়াচে বা বংশগত রোগ নয়

আর্সেনিক মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর এক ধরনের বিষ। এর কোনো রং, গন্ধ ও স্বাদ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি লিটার পানিতে ০.০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক থাকলে তা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের দেশের বেশিরভাগ এলাকার টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। আর্সেনিক রয়েছে এমন টিউবওয়েলের পানি খাওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ আর্সেনিকজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকে এ রোগের কারণে ধুঁকে ধুঁকে জীবন কাটাচ্ছে এবং কেউ কেউ মারা যাচ্ছে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে বাংলাদেশের মতো এত বেশি মানুষ আর্সেনিক ঝুঁকির মধ্যে নেই। সেক্ষেত্রে আর্সেনিক মুক্ত পানি নিশ্চিত করার উপায়গুলি জানা থাকলে পরিবারের স্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত রাখা সম্ভব। 


মানুষের শরীরে সাধারনত তিনভাবে আর্সেনিক প্রবেশ করতে পারে

প্রথমত- বাতাসের মাধ্যমে শ্বাসনালীর ভিতর দিয়ে
দ্বিতীয়ত- পানি ও খাদ্য দ্রব্যের মাধ্যমে খাদ্যনালীর ভিতর দিয়ে
তৃতীয়ত- ত্বকের মাধ্যমে শোষিত হয়ে শরীরে প্রবেশ করে|
  

আর্সেনিক কেন সমস্যা 

পানিতে আর্সেনিক বিষ থাকলেও আমরা তা খালি চোখে দেখতে পাই না। এ কারণে আমরা না জেনেই অনেক সময় আর্সেনিক বিষ রয়েছে এমন নলকূপের পানি পান করি। আর এভাবে আর্সেনিক বিষ পান করার কারণে আমরা আর্সেনিকজনিত রোগে আক্রান্ত হই। পানি বা অন্য কোনো মাধ্যম হতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণে আর্সেনিক শরীরে প্রবেশ করলে, ধীরে ধীরে দেহে তা জমা হতে থাকে এবং মানুষের দেহে আর্সেনিকের বিষক্রিয়া দেখা দেয়। মানুষের দেহে সাধারণত আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার লক্ষণ ৬ মাস থেকে ২০ বছর অথবা এর চেয়েও বেশী বছর পর দেখা যায়। এটি নির্ভর করে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর।


আর্সেনিক দূষণ এলাকা 

এদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫৯টি জেলার নলকূপের পানিতে আর্সেনিক দূষণ রয়েছে। শেরপুর, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগরাছড়ি ও বান্দরবান এই ৫টি জেলা এখনও আর্সেনিক দূষণমুক্ত বলে মনে করা হয়।


আর্সেনিক রোগীর লক্ষণসমূহ 

কোনো ব্যক্তির চুল, নখ ও চামড়া পরীক্ষা করলে বোঝা যায় যে, সে আর্সেনিকে আক্রান্ত কিনা। তবে একজনের শরীরে আর্সেনিকের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৬ মাস থেকে ২০ বছর অথবা এর চেয়েও বেশী বছর সময় লাগে এবং তিনটি পর্যায়ে লক্ষণগুলো দেখা দেয় -


রোগীর গায়ে (যেমন বুকে, পিঠে, পেটে) কালো দাগ দেখা দেয়। চামড়ার রং কালো হয়ে যায় বা ছোট ছোট কালো দাগ হয়।
হাত ও পায়ের তালু শক্ত খসখসে হয়ে যায় ও ছোট ছোট শক্ত গুটি দেখা দিতে পারে। পরে কালো কালো দাগ হয়।
গায়ের চামড়া মোটা ও খসখসে হয়ে যায়।
বমি বমি ভাব এবং বমি হয়; পাতলা পায়খানা হয়।
খাওয়া-দাওয়ায় অরুচি, রক্ত আমাশয়, মুখে ঘা ইত্যাদি দেখা দেয়।
কখনো কখনো জিহবার উপর ও গায়ের ভিতর কালো হয়ে যেতে পারে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষণসমূহ : 

চামড়ার বিভিন্ন জায়গায় সাদা, কালো বা লাল দাগ দেখা দেয়।
হাত-পায়ের তালু ফেটে যায় ও শক্ত গুটি ওঠে।
হাত-পা ফুলে ওঠে।

তৃতীয় পর্যায়ের লক্ষণসমূহ: 

কিডনি, লিভার ও ফুসফুস বড় হয়ে যায় ও টিউমার হয়।
হাত ও পায়ে ঘা হয়, পচন ধরে।
চামড়া, মূত্রথলি, ফুসফুসে ক্যান্সার হয়।
কিডনি ও লিভার অকেজো হয়ে যায়।
জন্ডিস হয়।
পেটে ও মাথায় ব্যথা হয়।
রক্ত বমি হয়।

আর্সেনিকে আক্রান্ত হলে করণীয় 

আর্সেনিক রোগের উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তার অথবা স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে দেখা করতে হবে ও তাঁর পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
অবশ্যই আর্সেনিকমুক্ত পানি পান করতে হবে।
নদী, পুকুর, বিল ইত্যাদির পানি ছেঁকে ২০ মিনিট ফুটিয়ে পান করা যায়।
বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি পান করা যেতে পারে, এজন্য বৃষ্টি শুরু হওয়ার ৫ মিনিট পর পানি ধরতে হবে।
আর্সেনিকে আক্রান্তরোগী সবধরনের খাবার খেতে পারেন। তবে শাক-সবজি ও পুষ্টিকর খাবার বেশি করে খেতে হবে।

আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা  
 
প্রতি লিটার পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা ০.০৫ মিলিগ্রাম। ০.০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক থাকলে সে পানি পান করা ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

আর্সেনিক দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য করণীয় 

নলকূপ বসানোর আগে মাটির নিচের পানিতে আর্সেনিক মাত্রা পরীক্ষা করে দেখতে হবে;
পুরানো নলকূপের পানিতে আর্সেনিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে, টিউবওয়েল বসানোর আগে আশেপাশের টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করতে হবে;
টিউবওয়েল বসানোর পর, গোড়া বাঁধানোর আগে আর্সেনিক পরীক্ষা করাতে হবে;
টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া গেলে টিউবওয়েলের মুখ লাল রং করতে হবে। পানিতে আর্সেনিক না থাকলে সবুজ রং করতে হবে। লাল রং দেখলে ঐ নলকূপের পানি খাওয়া যাবে না;
আর্সেনিক দূষণমুক্ত টিউবওয়েলের পানি প্রতি ৬ মাস পরপর পরীক্ষা করাতে হবে। দেখতে হবে পানি আর্সেনিক দূষণমুক্ত আছে কি না;
আর্সেনিকযুক্ত পানি রান্না ও খাওয়ার জন্য ব্যবহার করা যাবে না;
পাতকুয়ার পানিতে আর্সেনিক আছে কিনা পরীক্ষা করে পান করতে হবে ;
পুকুর বা নদীর পানি বিশুদ্ধ করে পান করতে হবে। এজন্য এক কলসি (২০ লিটার) পানিতে আধা চামচ (১০ মিলিগ্রাম) ফিটকিরি মিশিয়ে ২-৩ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। ফিটকিরি মিশালে পানির ময়লা কলসির নিচে জমা হবে। সাবধানে পাত্রের উপরের পরিস্কার পানি অন্য পাত্রে ঢেলে ফুটিয়ে পান করতে হবে;
বৃষ্টির পানি আর্সেনিকমুক্ত। তাই বৃষ্টি শুরু হওয়ার ৫ মিনিট পর পরিস্কার পাত্রে ধরে সেই পানি খাওয়া ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়।
আর্সেনিকযুক্ত পানি ফুটিয়ে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ ফুটালে আর্সেনিক দূর হয় না বরং পানি শুকিয়ে গেলে তাতে আর্সেনিকের ঘনত্ব আরো বেরে যায়। 

পানির আর্সেনিক পরীক্ষা 

আমরা দুইভাবে পানি পরীক্ষা করতে পারি -

ফিল্ড কিটের মাধ্যমে।
গবেষণাগারে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে।
এছাড়া নিজে না করে উপজেলা বা জেলার পরীক্ষাগারে পানি নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা যেতে পারে। ফিল্ড কিটের সাহায্যে খুব অল্প সময়ে পানি পরীক্ষা করা যায়। ফিল্ড কিটে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকে। টিউবওয়েল থেকে পানি নিয়ে সাথে সাথেই পানি পরীক্ষা করা যায়।
সরকারিভাবে উপজেলা পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। বেসরকারিভাবে বিভিন্ন এনজিও , যারা আর্সেনিক নিয়ে কাজ করে তাদের সাথে যোগাযোগ করেও পরীক্ষা করানো যায়।

পানিতে আর্সেনিক পরীক্ষার জন্য যাদের সাথে যোগাযোগ করবেন-

ওয়াটার এইড বাংলাদেশ
বাড়ি-৯৭ বি, রোড-২৫, ব্লক-এ, বনানী, ঢাকা-১২১৩। ফোন : ০২৮৮১৫৭৫৭, ফ্যাক্স : ০২৮৮১৮৫২১
ই-মেইল : info@wateraidbd.org

এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ
বাড়ি-৪৬, রোড-১৩/সি, ব্লক-ই, বনানী, ঢাকা-১২১৩। ফোন : ০২৯৮৯৪৪৯৩,
ই-মেইল : aandhaka@citech-bd.com, aandhaka@yahoo.com

এনজিও ফোরাম ফর ড্রিংকিং ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড স্যানিটেশন
৪/৬ ব্লক-ই, লালমাটিয়া, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ। ফোন : ০২৮১৫৪২৭৩-৪, ফ্যাক্স : ০২৮১১৭৯২৪
ই-মেইল : ngof@bangla.net, ngofaic@bangla.net

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ
বাড়ি-০৮, রোড-১৩৬, গুলশান-১ ঢাকা-১২১২। ফোন : ০২৮৮৩৭৭৯৬, ০২৯৮৯৪৩৩১
ই-মেইল : mail@actionaid-bd.org

আর্সেনিক দূষণ মুক্ত করার উপায়-

 বালতি পদ্ধতি-


এই পদ্ধতিতে ২টি বালতি ব্যবহার করা হয়। ধরে নিই, একটি লাল অন্যটি নীল বালতি। নীল বালতি উপরে ও লাল বালতি নিচে থাকবে।
বালতি দুটিতে ট্যাপ লাগানো থাকবে।
নীল বালতিতে আর্সেনিক দূষণমুক্ত টিউবওয়েলের পানি থাকবে। এই পানি আর্সেনিক দূষণমুক্ত করার জন্য পানিতে ফিটকিরি ও পটাশের মিশ্রণ দিতে হবে। ২০ লিটার পানির জন্য ৪ গ্রাম মিশ্রণ প্রয়োজন।
রাসায়নিক মিশ্রণ বা রাসায়নিক দ্রব্য পানিতে মিশিয়ে নাড়ানি দিয়ে ১৫-২০ বার পানি এমনভাবে ঘোরাতে হবে, যেন পানির মাঝখানে গর্তের সৃষ্টি হয়।
এবার তলানী জমার জন্য ২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।
দুই ঘন্টা পরে উপরের নীল রঙের বালতির ট্যাপ খুলে দিতে হবে। উপরের বালতির আর্সেনিক দূষণমুক্ত পানি নিচের লাল রঙের বালতিতে জমা হবে।
লাল রঙের বালতিতে ১০ ইঞ্চি পরিমাণ বালির ফিল্টার থাকে। এই ফিল্টার দিয়ে পানি আরও দূষণমুক্ত হবে।

সতর্কতা
মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র আর্সেনিক দুষণমুক্ত করার জন্য বালতি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
বালতি পদ্ধতিতে নীল বালতিতে ট্যাপ এমনভাবে লাগানো হয, যাতে বালতির দুই ভাগ পানি নিচের লাল বালতিতে জমা হয়। তলানীর আর্সেনিক দূষণমুক্ত পানি নীল বালতিতে থাকবে।
পানিতে রাসায়নিক মিশ্রণ দেওয়ার জন্য কাঠের চামচ ব্যবহার করতে হয়। পানিতে মিশ্রণ ভালোভাবে মেশানোর জন্য নাড়ানি ব্যবহার করতে হয়।
বালতি পদ্ধতির মাধ্যমে দিনে ২ বার পানি আর্সেনিক মুক্ত করা যায়। এতে ৪/৫ জনের একটি পরিবারে খাওয়া ও রান্নার কাজ চলে।
নীল বালতিতে যে তলানী জমবে ও পানি থাকবে তা কোনো গর্তে বা গোবরের গাদায় ফেলতে হবে।

তিন কলসি পদ্ধতি
এই পদ্ধতির জন্য ৩টি মাঝারি আকারের কলসি প্রয়োজন। এই কলসি ৩টি একটি কাঠের স্যান্ডের উপর সাজানো থাকে।
উপরের ২টি কলসির নিচে ছিদ্র করতে হবে। নিচের কলসিতে কোনো ছিদ্র থাকবে না। এটাতে আর্সেনিক দূষণমুক্ত পানি জমা থাকবে।
ছিদ্র কলসির উপরেরটিতে লোহার গুড়া ও মোটা বালি বা সিলেট স্যান্ড থাকবে। ২য় বা মাঝের কলসিতে চিকন বালি রাখতে হবে এবং ৩য় বা নিচের কলসি খালি থাকবে। এই খালি কলসিতে আর্সেনিক দূষণমুক্ত পানি জমা হবে।
এই পদ্ধতিতে সবচেয়ে উপরের কলসিতে আর্সেনিক দূষণমুক্ত পানি ঢালতে হবে। এই পানি পাইপের মাধ্যমে ২য় কলসিতে এসে জমা হবে। এই পদ্ধতিতে পানি আর্সেনিক দূষণমুক্ত করার জন্য ১ দিন সময় লাগে।
সর্তকতা
এই পদ্ধতিতে ব্যবহার করার সময় একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
কলসিগুলো সব সময় পরিস্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
ছিদ্র কলসিগুলো কখনও মাটির রাখা যাবে না। কারণ, ছিদ্র দিয়ে পোকামাকড়, রোগজীবাণু ঢুকতে পারে। কলসিগুলে সবসময় কাঠের স্ট্যান্ডে থাকবে।
কলসিগুলো রং করা যাবে না।

পি এস এফ পদ্ধতি 

এই পদ্ধতিতে পানি দূষণমুক্ত করার জন্য একটি পুকুরের প্রয়োজন।
ঐ পুকুর পাড়ে একটি টিউবওয়েল বসাতে হবে। টিউবওয়েলের সাথে পুকুরের সংযোগ থাকবে। টিউবওয়েল চাপলে পুকুর থেকে পানি আসবে।
টিউবওয়েলের পাশে একটি বড় পানির ট্যাংক থাকবে। টিউবওয়েলের মুখ এই ট্যাংকের সাথে সংযোগ করতে হবে। টিউবওয়েলের পানি এই ট্যাংকে এসে পড়বে।
পি এস এফের ট্যাংকের ভেতর ৩টি খোপ থাকবে। ট্যাংকের প্রথম খোপে থাকবে সিলেট স্যান্ড বা মোটা বালি। বালির নিচে জালি রাখা হয়। টিউবওয়েল চাপলে পানি প্রথমে মোটা বালিতে পড়বে। এই বালি ভেদ করে পানি অনেকাংশে জীবাণুমুক্ত হয়ে জালি দিয়ে দ্বিতীয় খোপে আসবে।
দ্বিতীয় খোপে চিকন বালি, ফিল্টার ও জালি থাকবে। প্রথম খোপ থেকে পানি জীবাণুমুক্ত হয়ে ২য় খোপে পড়বে। দ্বিতীয় খোপ থেকে পানি আরও দূষণমুক্ত হয়ে তৃতীয় খোপে পড়বে।
তৃতীয় খোপে থাকবে একটি অতি চিকন জালি। এই জালি দিয়ে সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত পানি আসবে। এই খোপের সাথে বাইরে ট্যাপ লাগানো থাকবে। ট্যাপ খুলে পানি নিতে হবে। পিএসএফ পদ্ধতি আর্সেনিক আক্রান্ত ও লবণাক্ত অঞ্চলের জন্য বেশি প্রয়োজন।
সতর্কতা
পিএসএফ পদ্ধতিতে পানি সম্পূর্ণ নিরাপদ হওয়ায় ঐ পানি রান্না, পান করাসহ সংসারের সব কাজে ব্যবহার করা যাবে।
পিএসএফের পুকুর এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে, যেন সবসময় পুকুরে পানি থাকে।
পিএসএফ-এর জন্য যে পুকুর ব্যবহার করা হবে, সেই পুকুরের চারপাশে বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। পুকুরে চারদিকে উঁচু বাঁধ দিতে হবে। যেন বৃষ্টির সময় বাইরের ময়লা পানি পুকুরে যেতে না পারে। পুকুরে গোসল করা যাবে না। কাপড় ধোয়া ও মাছ চাষ করা যাবে না।
পিএসএফ-এর পুকুরে পায়খানা বা কোনো ড্রেনের সংযোগ থাকতে পারবে না। পুকুর সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে। চারপাশে যেন কোনো আগাছা না জন্মায়।
প্রতি ১ মাস পর পর পিএসএফ বা ট্যাংক এবং বালি পরিস্কার করতে হবে।
পিএসএফ-এর পানি ৮-১০ টি পরিবার ব্যবহার করতে পারে।
প্রতিবার পানি নেওয়ার পর আবার টিউবওয়েল চেপে ট্যাংক পানি পূর্ণ করতে হবে।
বৃষ্টির পানি সংগ্রহ পদ্ধতি

বৃষ্টির পানি সংগ্রহ পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পূর্ণ আর্সেনিক দূষণমুক্ত ও নিরাপদ পানি পাওয়া যায়।
এই পদ্ধতিতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে রাখা যায়। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য ঘরের পাশে একটি বড় ঢাকনাযুক্ত মটকা বা ট্যাংক থাকবে। এই মটকা বা ট্যাংকের সাথে নিচের অংশে ট্যাপ লাগাতে হবে।
টিনের ঘরের চালের টিন বাকিয়ে এই নালা তৈরি করতে হবে। এই নালা ট্যাংকের সাথে সংযোগ থাকবে। বৃষ্টি নামলে পানি চাল বেয়ে নালায় পড়বে। এই নালা দিয়ে পানি ট্যাংকে যেয়ে পড়বে।
খড়, ছন ও গোলপাতার ঘরের চাল ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এতেও একটি নালা তৈরি করতে হবে। যা দিয়ে বৃষ্টির পানি ট্যাংকে পড়বে। ত্রিপল এমনভাবে ঘরের চালে ও খুঁটির সাথে বাঁধতে হবে যাতে পানি ত্রিপল জমা হয়। এই পলিথিনে ছিদ্র থাকবে। ছিদ্র দিয়ে পানি মটকা বা ট্যাংকে পড়বে।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে সংগ্রহ করা বৃষ্টির পানি খাওয়া ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা যাবে।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে ১০/১২ জন অথবা ২ টি পরিবার খরা মৌসুমে চলতে পারে। এজন্য ৩,২০০ লিটারের একটি ট্যাংক প্রয়োজন।
বৃষ্টি শুরু হওয়ার ৫ মিনিট পরে পানি ট্যাংকে সংগ্রহ করতে হবে।
বছরে দুইবার ট্যাংক পরিস্কার করতে হবে।

 সুত্র - জাতীয় ই-তথ্যকোষ

Monday, June 13, 2016

Biography of Prophet Muhammad (s) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী


হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী 

জন্মঃ হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। প্রচলিত ধারনা মোতাবেক, উনার জন্ম ৫৭০ খৃস্টাব্দে। প্রখ্যাত ইতিহাসবেত্তা মন্টগোমারি ওয়াট তার পুস্তকে ৫৭০ সনই ব্যবহার করেছেন। তবে উনার প্রকৃত জন্মতারিখ বের করা বেশ কষ্টসাধ্য। তাছাড়া মুহাম্মদ(সা.)নিজে কোনো মন্তব্য করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি. এজন্যই এ নিয়ে ব্যাপক মতবিরোধ রয়েছে। এমনকি জন্মমাস নিয়েও ব্যপক মতবিরোধ পাওয়া যায় ।যেমন, এক বর্ণনা মতে, উনার জন্ম ৫৭১ সালের ২০ বা ২২ শে এপ্রিল। সাইয়েদ সোলাইমান নদভী, সালমান মনসুরপুরী এবং মোহাম্মদ পাশা ফালাকির গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তবে শেষোক্ত মতই ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশী নির্ভরযোগ্য। যাই হোক, নবীর জন্মের বছরেই হস্তী যুদ্ধের ঘটনা ঘটে এবং সে সময় সম্রাট নরশেরওয়ার সিংহাসনে আরোহনের ৪০ বছর পূর্তি ছিল এ নিয়ে কারো মাঝে দ্বিমত নেই। তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ এবং মাতা আমেনা । জন্মের পূর্বেই মুহাম্মাদ (স) পিতাকে হারিয়ে এতীম হন । ৬ বছর বয়সে মা আমেনা এবং ৮ বছর বয়সে দাদা আবদুল মোত্তালেব এর মৃত্যুর পর এতীম মুহাম্মাদ (স) এর দায়িত্বভার গ্রহন করেন চাচা আবু তালেব ।

শৈশব কৈশোর কালঃ তত্কালীন আরবের রীতি ছিল যে তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ এবং সুঠাম গড়ন তৈরির জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন। এই রীতি অনুসারে মোহাম্মদকেও হালিমা বিনতে আবু জুয়াইবের (অপর নাম হালিমা সাদিয়া) হাতে দিয়ে দেয়া হয়। এই শিশুকে ঘরে আনার পর দেখা যায় হালিমার সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালনপালন করতে সমর্থ হন। তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য – শিশু মোহাম্মদ কেবল হালিমার একটি স্তনই পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালনপালনের পর হালিমা শিশু মোহাম্মদকে আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই মক্কায় মহামারী দেখা দেয় এবং শিশু মুহাম্মাদকে হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। হালিমাও চাচ্ছিলেন শিশুটিকে ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল। ইসলামী বিশ্বাসমতে এর কয়েকদিন পরই একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে – একদিন শিশু নবীর বুক চিরে কলিজার একটি অংশ বের করে তা জমজম কূপের পানিতে ধুয়ে আবার যথাস্থানে স্থাপন করে দেয়া হয়। এই ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে সিনা চাকের ঘটনা হিসেবে খ্যাত।এই ঘটনার পরই হালিমা মুহাম্মাদকে মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। ছয় বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি মায়ের সাথে কাটান। এই সময় একদিন আমিনার ইচ্ছা হয় ছেলেকে নিয়ে মদীনায় যাবেন। সম্ভবত কোন আত্মীয়ের সাথে দেখা করা এবং স্বামীর কবর জিয়ারত করাই এর কারণ ছিল। আমিনা ছেলে, শ্বশুর এবং দাসী উম্মে আয়মনকে নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মদীনায় পৌঁছেন। তিনি মদীনায় একমাস সময় অতিবাহিত করেন। একমাস পর মক্কায় ফেরার পথে আরওয়া নামক স্থানে এসে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। মাতার মৃত্যুর পর দাদা আবদুল মোত্তালেব শিশু মুহাম্মাদকে নিয়ে মক্কায় পৌঁছেন। এর পর থেকে দাদাই মুহাম্মাদের দেখাশোনা করতে থাকেন। মোহাম্মদের বয়স যখন ৮ বছর ২ মাস ১০ দিন তখন তার দাদাও মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার পুত্র আবু তালিবকে মোহাম্মদের দায়িত্ব দিয়ে যান।

আবু তালিব ব্যবসায়ী ছিলেন এবং আরবদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে একবার সিরিয়া সফরে যেতেন। মুহাম্মাদের বয়স যখন ১২ ব্ছর তখন তিনি চাচার সাথে সিরিয়া যাওয়ার জন্য বায়না ধরলেন। প্রগাঢ় মমতার কারণে আবু তালিব আর নিষেধ করতে পারলেননা। যাত্রাপথে বসরা পৌঁছার পর কাফেলাসহ আবু তালিব তাঁবু ফেললেন। সে সময় আরব উপদ্বীপের রোম অধিকৃত রাজ্যের রাজধানী বসরা অনেক দিক দিয়ে সেরা ছিল। কথিত আছে, শহরটিতে জারজিস সামে এক খ্রিস্টান পাদ্রী ছিলেন যিনি বুহাইরা বা বহিরা নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি তার গীর্জা হতে বাইরে এসে কাফেলার মুসাফিরদের মেহমানদারী করেন। এ সময় তিনি বালক মুহাম্মাদকে দেখে শেষ নবী হিসেবে চিহ্নিত করেন। ফুজ্জারের যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন নবীর বয়স ১৫ বছর। এই যুদ্ধে তিনি স্বয়ং অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের নির্মমতায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন। কিন্তু তাঁর কিছু করার ছিলনা। সে সময় থেকেই তিনি কিছু একটি করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন।

নবুয়তপূর্ব জীবনঃ আরবদের মধ্যে বিদ্যমান হিংস্রতা, খেয়ানতপ্রবণতা এবং প্রতিশোধস্পৃহা দমনের জন্যই হিলফুল ফুজুল নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহাম্মাদ এতে যোগদান করেন এবং এই সংঘকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি বিরাট ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় তরুণ বয়সে মুহাম্মাদের তেমন কোন পেশা ছিলনা। তবে তিনি বকরি চরাতেন বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। সাধারণত তিনি যে বকরিগুলো চরাতেন সেগুলো ছিল বনি সা’দ গোত্রের। কয়েক কিরাত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি মক্কায় বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির বকরিও চরাতেন। এরপর তিনি ব্যবসায় শুরু করেন। মুহাম্মাদ অল্প সময়ের মধ্যেই একাজে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। এতই খ্যাতি তিনি লাভ করেন যে তার উপাধি হয়ে যায় আল আমিন এবং আল সাদিক যেগুলোর বাংলা অর্থ হচ্ছে যথাক্রমে বিশ্বস্ত এবং সত্যবাদী। ব্যবসায় উপলক্ষ্যে তিনি সিরিয়া, বসরা, বাহরাইন এবং ইয়েমেনে বেশ কয়েকবার সফর করেন। মুহাম্মাদের সুখ্যাতি যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ তা অবহিত হয়েই তাকে নিজের ব্যবসার জন্য সফরে যাবার অনুরোধ জানান। মুহাম্মাদ এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং খাদীজার পণ্য নিয়ে সিরিয়ার অন্তর্গত বসরা পর্যন্ত যান।

খাদীজা মাইছারার মুখে মুহাম্মাদের সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ভূয়সী প্রশংশা শুনে অভিভূত হন। এছাড়া ব্যবসায়ের সফলতা দেখে তিনি তার যোগ্যতা সম্বন্ধেও অবহিত হন। এক পর্যায়ে তিনি মুহাম্মাদকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি স্বীয় বান্ধবী নাফিসা বিনতে মুনব্বিহরের কাছে বিয়ের ব্যাপরে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন। নাফিসার কাছে শুনে মুহাম্মাদ বলেন যে তিনি তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন জানাবেন। মুহাম্মাদ তাঁর চাচাদের সাথে কথা বলে বিয়ের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিয়ের সময় খাদীজার বয়স ছিল ৪০ আর মুহাম্মাদের বয়স ছিল ২৫।

মুহাম্মাদের বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কা’বা গৃহের পূনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বেশ কয়েকটি কারণে কাবা গৃহের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পুরনো ইমারত ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়। এভাবে পুনঃনির্মানের সময় যখন হাজরে আসওয়াদ (পবিত্র কালো পাথর) পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয় তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। মূলত কোন গোত্রের লোক এই কাজটি করবে তা নিয়েই ছিল কোন্দল। নির্মাণকাজ সব গোত্রের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ছিল একজনের কাজ। কে স্থাপন করবে এ নিয়ে বিবাদ শুরু হয় এবং চার-পাঁচ দিন যাবৎ এ বিবাদ অব্যাহত থাকার এক পর্যায়ে এটি এমনই মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় আবু উমাইয়া মাখজুমি একটি সমাধান নির্ধারণ করে যে পরদিন প্রত্যুষে মসজিদে হারামের দরজা দিয়ে যে প্রথম প্রবেশ করবে তার সিদ্ধান্তই সবাই মেনে নেবে। পরদিন মুহাম্মাদ সবার প্রথমে কাবায় প্রবেশ করেন। এতে সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং তাকে বিচারক হিসেবে মেনে নেয়। আর তার প্রতি সবার সুগভীর আস্থাও ছিল। যা হোক এই দায়িত্ব পেয়ে মুহাম্মাদ অত্যন্ত সুচারুভাবে ফয়সালা করেন। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে তার উপর নিজ হাতে হাজরে আসওয়াদ রাখেন এবং বিবদমান প্রত্যেক গোত্রের নেতাদের ডেকে তাদেরকে চাদরের বিভিন্ন কোণা ধরে যথাস্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং তারা তা ই করে। এরপর তিনি পাথর উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করেন।

নবুওয়ত প্রাপ্তিঃ চল্লিশ বছর বয়সে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ নবুওয়ত লাভ করেন, অর্থাৎ এই সময়েই স্রষ্টা তার কাছে ওহী প্রেরণ করেন। নবুওয়ত সম্বন্ধে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় আজ-জুহরির বর্ণনায়। জুহরি বর্ণিত হাদীস অনুসারে নবী সত্য দর্শনের মাধ্যমে ওহী লাভ করেন। ত্রিশ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর নবী প্রায়ই মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। তাঁর স্ত্রী খাদিজা নিয়মিত তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। এমনি এক ধ্যানের সময় ফেরেশতা জিব্রাইল তার কাছে আল্লাহ প্রেরিত ওহী নিয়ে আসেন। জিব্রাইল তাঁকে এই পংক্তি কটি পড়তে বলেন:

''পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না

উত্তরে নবী জানান যে তিনি পড়তে জানেন না, এতে জিব্রাইল তাকে জড়িয়ে ধরে প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং আবার একই পংক্তি পড়তে বলেন। কিন্তু এবারও মুহাম্মাদ নিজের অপারগতার কথা প্রকাশ করেন। এভাবে তিনবার চাপ দেয়ার পর মুহাম্মাদ পংক্তিটি পড়তে সমর্থ হন। অবর্তীর্ণ হয় কুরআনের প্রথম আয়াত গুচ্ছ; সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত। প্রথম অবতরণের পর নবী এতই ভীত হয়ে পড়েন যে কাঁপতে কাঁপতে নিজ গ্রহে প্রবেশ করেই খাদিজাকে কম্বল দিয়ে নিজের গা জড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেন। বারবার বলতে থাবেন, “আমাকে আবৃত কর”।  নওফেল তাঁকে শেষ নবী হিসেবে আখ্যায়িত করে। ধীরে ধীরে আত্মস্থ হন নবী। তারপর আবার অপেক্ষা করতে থাকেন পরবর্তী প্রত্যাদেশের জন্য। একটি লম্বা বিরতির পর তাঁর কাছে দ্বিতীয় বারের মত ওহী আসে। এবার অবতীর্ণ হয় সূরা মুদ্দাস্‌সির-এর কয়েকটি আয়াত। এর পর থেকে গোপনে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন মুহাম্মাদ। এই ইসলাম ছিল জীবনকে সম্পূর্ণ বদলে দেয়ার জন্য প্রেরিত একটি আদর্শ ব্যবস্থা। তাই এর প্রতিষ্ঠার পথ ছিল খুবই বন্ধুর। এই প্রতিকূলততার মধ্যেই নবীর মক্কী জীবন শুরু হয়। 

মক্কী জীবনঃ  গোপন প্রচার: প্রত্যাদেশ অবতরণের পর নবী বুঝতে পারেন যে, এটি প্রতিষ্ঠা করতে হলে তাকে পুরো আরব সমাজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াতে হবে; কারণ তৎকালীন নেতৃত্বের ভীত ধ্বংস করা ব্যাতীত ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার অন্য কোন উপায় ছিলনা। তাই প্রথমে তিনি নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাঝেগোপনে ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করেন। মুহাম্মাদের আহ্বানে ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন খাদিজা। এরপর মুসলিম হন মুহাম্মাদের চাচাতো ভাই এবং তার ঘরেই প্রতিপালিত কিশোর আলী, ইসলাম গ্রহণের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। ইসলামের বাণী পৌঁছে দেয়ার জন্য নবী নিজ বংশীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা করেন; এই সভায় কেউই তাঁর আদর্শ মেনে নেয়নি, এ সভাতে শুধু একজনই ইসলাম গ্রহণ করে, সে হলো আলী। ইসলাম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিল নবীর অন্তরঙ্গ বন্ধূ আবু বকর। এভাবেই প্রথম পর্যায়ে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। এবং এই প্রচারকাজ চলতে থাকে সম্পূর্ণ গোপনে।

প্রকাশ্য দাওয়াত: তিন বছর গোপনে দাওয়াত দেয়ার পর মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। এ ধরণের প্রচারের সূচনাটা বেশ নাটকীয় ছিল। নবী সাফা পর্বতের ওপর দাড়িয়ে চিৎকার করে সকলকে সমবেত করেন। এরপর প্রকাশ্যে বলেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌র রাসূল। কিন্তু এতে সকলে তার বিরুদ্ধে প্রচণ্ড খেপে যায় এবং এই সময় থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অত্যাচার শুরু হয়।

মক্কায় বিরোধিতার সম্মুখীন: বিরুদ্ধবাদীরা কয়েকটি স্তরে নির্যাতন শুরু করে: প্রথমত উস্কানী ও উত্তেজনার আবহ সৃষ্টি, এরপর অপপ্রচার, কুটতর্ক এবং যুক্তি। এক সময় ইসলামী আন্দোলনকে সহায়হীন করার প্রচেষ্টা শুরু হয় যাকে সফল করার জন্য একটি নেতিবাচক ফ্রন্ট গড়ে উঠে। একই সাথে গড়ে তোলা হয় সাহিত্য ও অশ্লীল গান-বাজনার ফ্রন্ট, এমনকি একং পর্যায়ে মুহাম্মাদের সাথে আপোষেরও প্রচেষ্টা চালায় কুরাইশরা। কিন্তু মুহাম্মাদ তা মেনে নেননি; কারণ আপোষের শর্ত ছিল নিজের মত ইসলাম পালন করা, সেক্ষেত্র তার ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যই ভেস্তে যেতো।

ইথিওপিয়ায় হিজরত: ধীরে ধীরে যখন মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চরম রূপ ধারণ করে, তখন নবী কিছু সংখ্যক মুসলিমকে আবিসিনিয়ায় হিজরত করতে পাঠান। সেখান থেকেও কুরাইশরা মুসলিমদের ফেরত আনার চেষ্টা করে, যদিও তৎকালীন আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশীর কারণে তা সফল হয়নি।

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ইসলাম গ্রহণ: এরপর ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে তা হল উমর ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ। নবী সবসময় চাইতেন যেন আবু জেহেল ও উমরের মধ্যে যেকোন একজন অন্তত ইসলাম গ্রহণ করে। তার এই ইচ্ছা এতে পূর্ণতা লাভ করে। আরব সমাজে উমরের বিশেষ প্রভাব থাকায় তার ইসলাম গ্রহণ ইসলাম প্রচারকে খানিকটা সহজ করে, যদিও কঠিন অংশটিই তখনও মুখ্য বলে বিবিচেত হচ্ছিল। এরপর একসময় নবীর চাচা হামযা ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণে আরবে মুসলিমদের আধিপত্য কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হয়।

একঘরে অবস্থা: এভাবে ইসলাম যখন শ্লথ গতিতে এগিয়ে চলছে তখন মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার অনুসারী সহ সহ গোটা বনু হাশেম গোত্রকে একঘরে ও আটক করে। তিন বছর আটক থাকার পর তারা মুক্তি পায়।

দুঃখের বছর তায়েফ গমন: কিন্তু মুক্তির পরের বছরটি ছিল মুহাম্মাদের জন্য দুঃখের বছর। কারণ এই বছরে খুব স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তার স্ত্রী খাদিজা ও চাচা আবু তালিব মারা যায়। দুঃখের সময়ে নবী মক্কায় ইসলামের প্রসারের ব্যাপরে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ হয়ে তিনি মক্কা বাদ দিয়ে এবার ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফ যান (অবশ্য তায়েফ গমনের তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে)। কিন্তু সেখানে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি চূড়ান্ত অপমান, ক্রোধ ও উপহাসের শিকার হন। এমনকি তায়েফের লোকজন তাদের কিশোর-তরুণদেরকে মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পিছনে লেলিয়ে দেয়; তারা ইট-প্রস্তরের আঘাতে নবীকে রক্তাক্ত করে দেয়। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েননি; নব নব সম্ভবনার কথা চিন্তা করতে থাকেন।
মিরাজ তথা উর্দ্ধারোহন: এমন সময়েই কিছু শুভ ঘটনা ঘটে। ইসলামী ভাষ্যমতে এ সময় মুহাম্মাদ এক রাতে মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত মসজিদুল আকসায় যান; এই ভ্রমণ ইতিহাসে ইসরা নামে পরিচিত। কথিত আছে, মসজিদুল আকসা থেকে তিনি একটি বিশেষ যানে করে উর্দ্ধারোহণ করেন এবং মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করেন, এছাড়া তিনি বেহেশ্‌ত ও দোযখ সহ মহাবিশ্বের সকল স্থান অবলোকন করেন। এই যাত্রা ইতিহাসে মি’রাজ নামে পরিচিত। এই সম্পূর্ণ যাত্রার সময়ে পৃথিবীতে কোন সময়ই অতিবাহিত হয়নি বলে বলা হয়।

মদীনায় হিজরতঃ এরপর আরও শুভ ঘটনা ঘটে। মদীনার বেশকিছু লোক ইসলামের প্রতি উৎসাহী হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। তারা মূলত হজ্জ্ব করতে এসে ইসলামে দাওয়াত পেয়েছিল। এরা আকাব নামক স্থানে মুহাম্মাদের কাছে শপথ করে যে তারা যে কোন অবস্থায় নবীকে রক্ষা করবে এবং ইসলামে প্রসারে কাজ করবে। এই শপথগুলো আকাবার শপথ নামে সুপরিচিত। এই শপথগুলোর মাধ্যমেই মদীনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং একসময় মদীনার ১২ টি গোত্রের নেতারা একটি প্রতিনিধিদল প্রেরণের মাধ্যমে মুহাম্মাদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আসার আমন্ত্রণ জানায়। মদীনা তথা ইয়াসরিবে অনেক আগে থেকে প্রায় ৬২০ সাল পর্যন্ত গোত্র গোত্র এবং ইহুদীদের সাথে অন্যদের যুদ্ধ লেগে থাকে। বিশেষত বুয়াছের যুদ্ধে সবগুলো গোত্র যুদ্ধে অংশ নেয়ায় প্রচুর রক্তপাত ঘটে। এ থেকে মদীনার লোকেরা বুঝতে সমর্থ হয়েছিল যে, রক্তের বিনিময়ে রক্ত নেয়ার নীতিটি এখন আর প্রযোজ্য হতে পারেনা। এজন্য তাদের একজন নেতা দরকার যে সবাইকে একতাবদ্ধ করতে পারবে। এ চিন্তা থেকেই তারা মুহাম্মাদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, যদিও আমন্ত্রণকারী অনেকেই তখনও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেনি। এই আমন্ত্রণে মুসলিমরা মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় চলে যায়। সবশেষে মুহাম্মাদ ও আবু বকর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মদীনায় হিজরত করেন। তাদের হিজরতের দিনেই কুরাইশরা মুহাম্মাদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)হত্যার পরিকল্পনা করেছিল যদিও তা সফল হয়নি। এভাবেই মক্কী যুগের সমাপ্তি ঘটে।

মাদানী জীবনঃ নিজ গোত্র ছেড়ে অন্য গোত্রের সাথে যোগদান আরবে অসম্ভব হিসেবে পরিগণিত হত। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে সেরকম নয়, কারণ এক্ষেত্রে ইসলামের বন্ধনই শ্রেষ্ঠ বন্ধন হিসেবে মুসলিমদের কাছে পরিগণিত হত। এটি তখনকার যুগে একটি বৈপ্লবিক চিন্তার জন্ম দেয়। ইসলামী পঞ্জিকায় হিজরতের বর্ষ থেকে দিন গণনা শুরু হয়। এজন্য ইসলামী পঞ্জিকার বর্ষের শেষে AH উল্লেখিত থাকে যার অর্থ: After Hijra

স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সংবিধান প্রণয়ন: মুহাম্মাদ মদীনায় গিয়েছিলেন একজন মধ্যস্থতাকারী এবং শাসক হিসেবে। তখন বিবদমান দুটি মূল পক্ষ ছিল আওস ও খাযরাজ। তিনি তার দায়িত্ব সুচারুরুপে পালন করেছিলেন। মদীনার সকল গোত্রকে নিয়ে ঐতিহাসিক মদীনা সনদ স্বাক্ষর করেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম সংবিধান হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। এই সনদের মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে সকল রক্তারক্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এমনকি এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নীতির গোড়াপত্তন করা হয় এবং সকল গোত্রের মধ্যে জবাবদিহিতার অনুভুতি সৃষ্টি করা হয়। আওস, খাযরাজ উভয় গোত্রই ইসলাম গ্রহণ করেছিল। এছাড়াও প্রধানত তিনটি ইহুদী গোত্র (বনু কাইনুকা, বনু কুরাইজা এবং বনু নাদির)। এগুলোসহ মোট আটটি গোত্র এই সনদে স্বাক্ষর করেছিল। এই সনদের মাধ্যমে মদীনা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)হন তার প্রধান।

মক্কার সাথে বিরোধ যুদ্ধ: মদীনায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই মক্কার সাথে এর সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হতে থাকে। মক্কার কুরাইশরা মদীনা রাষ্ট্রের ধ্বংসের জন্য যুদ্ধংদেহী মনোভাব পোষণ করতে থাকে। মুহাম্মাদ(স)মদীনায় এসে আশেপাশের সকল গোত্রের সাথে সন্ধি চুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে শান্তি স্থাপনে অগ্রণী ছিলেন। কিন্তু মক্কার কুরাইশরা গৃহত্যাগী সকল মুসলিমদের সম্পত্তি ক্রোক করে। এই অবস্থায় ৬২৪ সালে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)৩০০ সৈন্যের একটি সেনাদলকে মক্কার একটি বাণিজ্যিক কাফেলাকে বাঁধা দেয়ার উদ্দেশ্যে পাঠায়। কারণ উক্ত কাফেলা বাণিজ্যের নাম করে অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। কুরাইশরা তাদের কাফেলা রক্ষায় সফল হয়। কিন্তু এই প্রচেষ্টার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য যুদ্ধের ডাক দেয়। আত্মরক্ষামূলক এই যুদ্ধে মুসলিমরা সৈন্য সংখ্যার দিক দিয়ে কুরাইশদের এক তৃতীয়াংশ হয়েও বিজয় অর্জন করে। এই যুদ্ধ বদর যুদ্ধ নামে পরিচিত যা ৬২৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ মার্চ তারিখে সংঘটিত হয়। মুসলিমদের মতে এই যুদ্ধে আল্লাহ মুসলিমদের সহায়তা করেছিলেন। যাহোক, এই সময় থেকেই ইসলামের সশস্ত্র ইতিহাসের সূচনা ঘটে। এরপর ৬২৫ সালের ২৩ মার্চে উহুদ যুদ্ধ সংঘটিতে হয়। এতে প্রথম দিকে মুসলিমরা পরাজিত হলেও শেষে বিজয়ীর বেশে মদীনায় প্রবেশ করতে সমর্থ হয়। কুরাইশরা বিজয়ী হওয়া সত্ত্বেও চূড়ান্ত মুহূর্তের নীতিগত দূর্বলতার কারণে পরাজিতের বেশে মক্কায় প্রবেশ করে। ৬২৭ সালে আবু সুফিয়ান কুরাইশদের আরেকটি দল নিয়ে মদীনা আক্রমণ করে। কিন্তু এবারও খন্দকের যুদ্ধে মুসলিমদের কাছে পরাজিত হয়। যুদ্ধ বিজয়ে উৎসাহিত হয়ে মুসলিমরা আরবে একটি প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হয়। ফলে আশেপাশের অনেক গোত্রের উপরই মুসলিমরা প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়।

মদীনার ইহুদিদের সাথে সম্পর্কঃ কিন্তু এ সময় মদীনার বসবাসকারী ইহুদীরা ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য হুমকী হয়ে দেখা দেয়। মূলত ইহুদীরা বিশ্বাস করতনা যে, একজন অ-ইহুদী শেষ নবী হতে পারে। এজন্য তারা কখনই ইসলামের আদর্শ মেনে নেয়নি এবং যখন ইসলামী রাষ্ট্রের শক্তি বুঝতে পারে তখন তারা এর বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)প্রতিটি যুদ্ধের পরে একটি করে ইহুদী গোত্রের উপর আক্রমণ করেন। বদর ও উহুদের যুদ্ধের পর বনু কাইনুকা ও বনু নাদির গোত্র সপরিবারে মদীনা থেকে বিতাড়িত হয়; আর খন্দকের পর সকল ইহুদীকে মদীনা থেকে বিতাড়ন করা হয়।মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এই ইহুদী বিদ্বেশের দুটি কারণের উল্লেখ পাওয়া যায়, একটি ধর্মীয় এবং অন্যটি রাজনৈতিক। ধর্মীয় দিক দিয়ে চিন্তা করলে আহলে কিতাব হয়েও শেষ নবীকে মেনে না নেয়ার শাস্তি ছিল এটি। আর রাজনৈতিকভাবে চিন্তা করলে, ইহুদীরা মদীনার জন্য একটি হুমকী ও দুর্বল দিক ছিল। এজন্যই তাদেরকে বিতাড়িত করা হয়।

হুদাইবিয়ার সন্ধিঃ কুরআনে যদিও মুসলিমদের হজ্জ্বের নিয়ম ও আবশ্যকীয়তা উল্লেখ ককরা আছে, তথাপি কুরাইশদের শত্রুতার কারণে মুসলিমরা হজ্জ্ব আদায় করতে পারছিল না। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক দিব্যদর্শনে দেখতে পান তিনি হজ্জ্বের জন্য মাথা কামাচ্ছেন। এ দেখে তিনি হজ্জ্ব করার জন্য মনস্থির করেন এবং ৬ হিজরী সনের শাওয়াল মাসে হজ্জ্বের উদ্দেশ্যে ১৪০০ সাহাবা নিয়ে মদীনার পথে যাত্রা করেন। কিন্তু এবারও কুরাইশরা বাঁধা দেয়। অগত্যা মুসলিমরা মক্কার উপকণ্ঠে হুদাইবিয়া নামক স্থানে ঘাঁটি স্থাপন করে। এখানে কুরাইশদের সাথে মুসলিমদের একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা ইতিহাসে হুদাইবিয়ার সন্ধি নামে সুপরিচিত। এই সন্ধি মতে মুসলিমরা সে বছর হজ্জ্ব করা ছাড়াই মদীনায় প্রত্যাবর্তন করে। সন্ধির অধিকাংশ শর্ত মুসলিমদের বিরুদ্ধে গেলেও মুহাম্মাদ এই চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন।

বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়কদের কাছে পত্র প্রেরণঃ রাসূল (সাঃ)সারা বিশ্বের রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। সুতরাং পৃথিবীর সব জায়গায় ইসলামের আহ্বান পৌঁছ দেয়া তাঁর দায়িত্ব ছিল। হুদায়বিয়ার সন্ধির পর কুরাইশ ও অন্যান্য আরব গোত্রগুলো থেকে আশ্বস্ত হয়ে এ কাজে মননিবেশ করেন। সেসময়ে পৃথিবীর প্রধান রাজশক্তিগুলো ছিল ইউরোপের রোম সাম্রাজ্য (the holy roman empire),এশিয়ার পারস্য সাম্রাজ্য এবং আফ্রিকার হাবশা সাম্রাজ্য। এছাড়াও মিশরের ‘আযীয মুকাউকিস’,ইয়ামামার সর্দার এবং সিরিয়ার গাসসানী শাসনকর্তাও বেশ প্রতাপশালী ছিল। তাই ষষ্ঠ হিজরীর জিলহজ্জ মাসের শেষদিকে একইদিনে এদেঁর কাছে ইসলামের আহ্বানপত্রসহ ছয়জন দূত প্রেরণ করেন।

প্রেরিত দূতগণের তালিকাঃ
  1. দাহিয়া ক্বালবী (রাঃ)কে রোমসম্রাট কায়সারের কাছে।
  2. আবদুল্লাহ বিন হুযাফা (রাঃ)কে পারস্যসম্রাট পারভেজের কাছে।
  3. হাতিব বিন আবূ বুলতা’আ (রাঃ) কে মিশরৈর শাসনকর্তার কাছে।
  4. আমর বিন উমাইয়া (রাঃ) কে হাবশার রাজা নাজ্জাশীর কাছে।
  5. সলীত বিন উমর বিন আবদে শামস (রাঃ) কে ইয়ামামার সর্দারের কাছে।
  6. শুজাইবনে ওয়াহাব আসাদী (রাঃ)কে গাসসানী শাসক হারিসের কাছে।
শাসকদের মধ্য হতে শুধুমাত্র বাদশাহ নাজ্জাসী ছাড়া আর কেউ ইসলাম গ্রহণ করেননি।

মক্কা বিজয়ঃ দশ বছরমেয়াদি হুদাইবিয়ার সন্ধি মাত্র দু’ বছর পরেই ভেঙ্গে যায়। খুযাআহ গোত্র ছিল মুসলমানদের মিত্র,অপরদিকে তাদের শত্রু বকর গোত্র ছিল কুরাইশদের মিত্র। একরাতে বকর গোত্র খুযাআদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। কুরাইশরা এই আক্রমণে অন্যায়ভাবে বকর গোত্রকে অস্ত্র দিয়ে সহয়োগিতা করে। কোন কোন বর্ণনামতে কুরাইশদের কিছু যুবকও এই হামলায় অংশগ্রহণ করে। এই ঘটনার পর মুহাম্মাদ (সঃ) কুরাইশদের কাছে তিনটি শর্তসহ পত্র প্রেরণ করেন এবং কুরাইশদেরকে এই তিনটি শর্তের যে কোন একটি মেনে নিতে বলেন। শর্ত তিনটি হলো;
  • কুরাইশ খুযাআ গোত্রের নিহতদের রক্তপণ শোধ করবে।
  • অথবা তারা বকর গোত্রের সাথে তাদের মৈত্রীচুক্তি বাতিল ঘোষণা করবে।
  • অথবা এ ঘোষণা দিবে যে, হুদায়বিয়ার সন্ধি বাতিল করা হয়েছে এবং কুরাইশরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।
কুরাইশরা জানালো যে, তারা শুধু তৃতীয় শর্তটি গ্রহণ করবে। কিন্তু খুব দ্রুত কুরাইশ তাদের ভুল বুঝতে পারলো এবং আবু সুফয়ানকে সন্ধি নবায়নের জন্য দূত হিসেবে মদীনায় প্রেরণ করলো। কিন্তু মুহাম্মাদ (সঃ) কুরাইশদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন এবং মক্কা আক্রমণের প্রস্তুতি শুরু করলেন।
৬৩০ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদ (সঃ) দশ হাজার সাহাবীর বিশাল বাহিনী নিয়ে মক্কাভিমুখে রওয়ানা হলেন।সেদিন ছিল অষ্টম হিজরীর রমজান মাসের দশ তারিখ। বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষ ছাড়া মোটামুটি বিনাপ্রতিরোধে মক্কা বিজিত হলো এবং মুহাম্মাদ (সঃ) বিজয়ীবেশে সেখানে প্রবেশ করলেন। তিনি মক্কাবাসীর জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দিলেন। তবে দশজন নর এবং নারী এই ক্ষমার বাইরে ছিল। তারা বিভিন্নভাবে ইসলাম ও মুহাম্মাদ (সঃ)এর কুৎসা রটাত। তবে এদের মধ্য হতেও পরবর্তিতে কয়েকজনকে ক্ষমা করা হয়। মক্কায় প্রবেশ করেই মুহাম্মাদ (সঃ) সর্বপ্রথম কাবাঘরে আগমন করেন এবং সেখানকার সকল মূর্তি ধ্বংস করেন। মুসলমানদের শান-শওকত দেখে এবং মুহাম্মাদ (সঃ)এর ক্ষমাগুণে মুগ্ধ হয়ে অধিকাংশ মক্কাবাসীই ইসলাম গ্রহণ করে। কোরআনে এই বিজয়ের ঘটনা বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে।

মৃত্যুঃ বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পর হিজরী ১১ সালের সফর মাসে মুহাম্মদ (সাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের তাপমাত্রা প্রচন্ড হওয়ার কারণে পাগড়ির ওপর থেকেও উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছিল। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি এগারো দিন নামাজের ইমামতি করেন। অসুস্থতা তীব্র হওয়ার পর তিনি সকল স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আয়েশা (রাঃ)এর কামরায় অবস্থান করতে থাকেন। তাঁর কাছে সাত কিংবা আট দিনার ছিল,মৃত্যুর একদিন পূর্বে তিনি এগুলোও দান করে দেন। বলা হয়, এই অসুস্থতা ছিল খাইবারের এক ইহুদি নারীর তৈরি বিষ মেশানো খাবার গ্রহণের কারণে। অবশেষে ১১ হিজরী সালের রবিউল আউয়াল মাসের ১ তারিখ সন্ধায় তিনি মৃত্যবরণ করেন। এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। আলী (রাঃ) তাকেঁ গোসল দেন এবং কাফন পরান। আয়েশ (রাঃ)এর কামরার যে স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন,জানাযার পর সেখানেই তাকেঁ দাফন করা হয়।

সময় সংবাদ বিডি অবলম্বনে


Friday, April 15, 2016

Windows 10 Screen Recorder With Audio

Use the Xbox app to record your screen in Windows 10


Windows 10 has a native feature that lets you record a video clip -- of up to 2 hours -- of your screen. But you may not have noticed this feature, because it's hidden away inside the Xbox app.

Called Game DVR, this feature is designed to record video game footage (you know, for your future YouTube/Twitch stardom). But it doesn't just work for games. In fact, it works in just about any app, including your Internet browser and even Microsoft Word. Because sometimes you want to record yourself typing up an article about the Game DVR feature.

As a screen recording app, Game DVR is pretty limited. For example, you can't record your entire screen (so it's not useful for making tutorials on how to use it), you can only record one window/app at a time. But it's still pretty handy if you need to grab a video clip within an app, so here's how to activate and use it:


Step 1: If you haven't used the Xbox app yet, you'll need to first open it to set it up. To do this, open the Start menu and go to All apps > Xbox.

Step 2: Once the Xbox app is set up, you can open the Game bar inside any app or program by hitting the keyboard shortcut: Win key + G. The first time you open the Game bar inside an app or program, you will see a pop-up message asking if you want to open the Game bar. Click Yes this is a game. Do this even if it's not a game -- it will work with any app, including Internet browsers.

Step 3: In the Game bar, hit the big red button to start recording a video of the app. This will only record the app window -- it will not record your full screen, nor will it record mouse movements. To stop the recording, open up the Game bar with Win key + G and hit the big red stop button.

Step 4: You can find your new video clip in the Xbox app. Either click the Xbox button on the Game bar, or open the Xbox app from the Start menu. On the left side of the Xbox app window, you'll see a series of icons. Click the icon that looks like an Xbox controller in front of a film strip (the sixth icon from the top) to open the Game DVR menu. Here, you'll see a list of your recorded clips, along with some limited editing features such as the ability to trim a clip or rename it.

Step 5: The Game bar is pretty limited when it comes to screen recording, but you can adjust some video recording settings in the Game bar's settings menu and in the Xbox app. To open the Game bar's settings menu, open the Game bar and click the settings (gear) icon. Here, you'll be able to adjust background recording time, set the maximum length of clips (30 minutes, 1 hour or 2 hours), and have the Game bar remember the program as a game (this is turned on by default). For more advanced settings, such as the ability to set your own keyboard shortcuts to control the Game bar, click Go to the Xbox app to see more settings.


Use the Xbox app to record your screen in.....

 

See Video Toturial How To Use Xbox App To Record Your Screen With Audio...


 

Friday, March 4, 2016

Emergency Ambulance Service Bangladesh

Ambulance Services Telephone number In Dhaka And Others Area


 


Ad-Din Hospital
Phone: 9362929

 
Al-Markazul Islami Ambulance Service
Phone: 9127867, 8114980

 
Alif Ambulance
Phone: 8117576 , 9131688
 

Anjuman-E-Mufidul Islam
Phone: 9336611, 7411660, 7410786

 
Apanjon Ambulance Service
Phone: 9125420

 
CMH (Dhaka)
Phone: 9871469

 
Day-Night Ambulance Service
Phone: 9123073, 8122041

 
Dhaka City Corporation (Mirpur Control Room)
Phone: 9004734

 
Dhaka City Corporation (Nagar Bhaban Control Room)
Phone: 9556014, 9556018, 9557186-87

 
Dhaka Medical College Hospital
Phone: 505025-29, 500121-5

 
Fire Service
Phone: 955666-7, 9553333-7, 9555555

 
Green Ambulance Service
Phone: 9334121, 8612412

 
Holy Family Red Crescent Hospital
Phone: 8311721-5, 9113512

 
ICDDRB (Mohakhali)
Phone: 8811751-60, 600171-8
 

Medinova Medical Service Ltd.
Phone: 8113721, 9120288

Monowara Hospital (pvt.) Ltd.
Phone: 8318135, 8319802, 8318529

National Heart Institute
Phone: 9122560-72


Prime General Hospital
Phone: 9562267

Rafa Ambulance Service
Phone: 9110663

Red Crescent Society 
Phone: 9330188-9, 9358799

Salimullah Medical College Mitford Hospital
Phone: +88 02 7319002-6
 

Shahid Suhrawardi Hospital
Phone: 9130800

Shefa Ambulance Services
Phone: 9111758, 8110864
 
South Asian Hospital
Phone: 8616565, 9665852

 
Sagor Ambulance Services
Phone: 01710995376, 01712846587
  

Square Hospital Ambulance Service
+8801713377773,  +8801713377775,  +88028144466,  +88028159457 (Ext – 2005)
For Square Air Ambulance, Call:  +8801730011734,  +88028859007


Al-Raji Hospital Ltd.
Farmgate, Dhaka
Phone: 8119229, 9117775


Aysha Memorial Specialized Hospital
74F/74F Peacock Square
Air Port Road, Mohakhai, Dhaka
Phone: 9122689-90, 9131742


PG Hospital
Tel: +88 02 8614001-5, 8614545-9


China-Bangla (JV) Ltd.
House#15, Shayesta Khan Avenue, Sector# 4,
Dhaka, Phone: 8913674, 8913606


City Hospital (Pvt) Ltd.
69/1, Public Colleger Goli
Panthapath, Dhaka
Phone: 8617852


Dhaka ENT (Ear Nose Throat) Hospital
Dhanmondi, Dhaka
Phone: 8613936, 8617593


 Dhaka Shishu Hospital
Sher-E-Bangla Nagar
Dhaka-1207, Phone: +88 02 8116061-2, 8114571-2 


Apollo Hospitals
Plot 81, Block E, Bashundhara R/A
Dhaka - 1229


Bangladesh Medical College
House# 33/35, Road# 14/A
(New) Dhanmondi R/A, Dhaka
Phone: 9118202, 8115843


Gana Shasthya Nagar Hospital
House# 14/E, Road# 6, Dhanmondi
Dhaka-1205, Phone: 8617208


Green Hospital
House# 31, Road# 6, Dhanmondi
Dhaka, Phone: 8612412



 ICDDRB
Address: Mohakhali, Dhaka
Phone: 8811751-60


Marks ENT Clinic & General Hospital
Mirpur, Dhaka.
Phone: 9872241, 9871527


Modern Clinic of Surgery & Midwifery
Gulshan, Dhaka
Phone: 9883948


Ibn Sina Diagnostic & Imaging Center
House 48, Road-9/A
Dhanmondi R/A, Dhaka
Tel: 9126625-6, 9128835-7


LIbn Sina Hospital at Sankar
House #68, Road #15/A
Dhanmondi R/A, Dhaka 1209
Phone: 8119513, 8113709, 01817144609,
01817144612 (ICU)


Square Hospitals Ltd.
18/F West Panthopath
Dhaka 1205, Bangladesh
Phone: +880 2 8129334, +880 2 9146248
Emergency: +880 2 8144466
Email: info@squarehospital.com


Z.H. Sikder Women's Medical College & Hospital
Monica Estate (Western Side of Dhanmondi)
Dhaka-1209, Phone: 8115951, 8113313


Universal Medical Hospital
Nurer Chala, Besides Kolotan Public School
Notun Bazar, Dhaka
Phone: 8813375


National Heart Foundation Hospital
Plot# 7/2, Section# 2, Mirpur, Dhaka
Phone: 8010491, 8014914


National Institute of Cardiac Vascular Disease
Ser-E-Bangla Nagar, Dhaka
Phone: 9122560


P.G. Hospital (BSMMU)
Shahbag, Dhaka
Phone: 8614001-5, 8614545-9


 
South Asia Hospital Ltd.
25 Green Road, Pantahpath
Dhaka-1205, Phone: 8616565, 9665852


Samorita Hospital Ltd.
89/1 Panthapath, Dhaka-1215
Phone: 9131901, 9129971


Dhaka Eye Hosptial, BNSB
Mirpur-1, Dhaka
Phone: 8014476


Medinova Medical Services
Address: House# 71/A, Road#5/A, Dhanmondi
Dhaka-1209. Phone: 8620353-7, 8618583


Islamia Eye Hospital
Farmgate, Dhaka.
Phone: 8112856, 9119315


Ibn Sina Medical Imaging Center
House 58, Road-2/A
Dhanmondi R/A, Dhaka
Tel: 9663289, 9666497, 8628118, 8618262, 8610420


City Dental College & Hospital
1085/1 Malibagh, Chowdhurypara
Dhaka-1219, Phone: 9341662-4, 9338470


National Heart Institute
Shyamoli, Dhaka
Phone: 9122560-72, 8114089


Ibn Sina Hospital Fouad Al Khatib Unit
2/2, Kallyanpur Bus Stand
Mirpur Road, Dhaka 1207
Phone: 9007188, 9004317


Monowara Hospital (Pvt) Ltd.
Siddheswari, Dhaka
Phone: 8318135, 8319802, 83


Central Hospital
House# 2, Road# 5
Green Road, Dhanmondi, Dhaka-1205
Phone: 9660015-19, 8619321


Crescent Hospital & Diagnostic Complex Ltd.
Address: 22/2 Babar Road
(Opposite of Sohrarwardi Hospital),
Mirpur Road, Dhaka
Phone: 8119775, 9117524


Holy Family Red Cresent Hospital
Eskaton, Dhaka.
Phone: 8311721-25


Dushtha Shasthya Hospital (D.S.K)
21/1 Khilgi Road, Mohammadpur-1207
Dhaka, Phone: 8124952


Gene Cure Health Care Ltd.
37 Kemal Ataturk Avenue, Banani
Dhaka-1213, Phone: 8853707


Nibedita Shishu Hospital Ltd.
Wari, Dhaka
Phone: 7119473


S.P.R.C Hospital
New Eskaton Road, Dhaka
Phone: 9339089, 9342744


Shahid Suhrawardy Hospital
Ser-E-Banglanagar, Dhaka
Phone: 9130800, 9122560-78


Stone Crash Hospital
Dhanmondi, Dhaka
Phone: 503948, 8618388


Labaid Cardiac Hospital
House # 1, Road # 4, Dhanmondi, Dhaka - 1205
+880-2-8610793-8, 9670210-3,
8631177, 01819-215890
http://www.labaidgroup.com/lch.php



Labaid Specialized Hospital
House # 1, Road # 4, Dhanmondi
+880-2-8610793-8, 9670210-3, 8631177, 01819-215890
http://www.labaidgroup.com/


Uttara Central Hospital
Sector : 1, Uttara, Dhaka
Phone: 8911551

Tuesday, March 1, 2016

The Ultimate Guide to Windows 10 Keyboard Shortcuts

 

If you want to give the impression that you’ve been using Windows 10 for years, learning a few keyboard shortcuts is the best way to go about it—you can navigate around the interface, get apps in position, trigger events, change settings and more with a couple of taps on your keyboard. Here are the shortcuts we’ve been finding most useful.

 

Window snapping


Window snapping has changed slightly in Windows 10 and so have the shortcuts. App windows can be snapped to either side of the screen, as in Windows 8, but you can also assign them to quadrants and get four windows open on screen simultaneously.

Windows Key+Left — snap active window to the left.
Windows Key+Right — snap active window to the right.
Windows Key+Up — snap the active window to the top.
Windows Key+Down — snap the active window to the bottom.

Bonus: Whenever you snap a window to a side or a quadrant, Windows will automatically suggest you pick one of your open apps to fill the remaining real estate on your desktop.


Virtual desktops


Official support for virtual desktops is one of the most exciting new additions in Windows 10—unless you’ve been developing a third-party utility to do the same job! It’s kind of like having extra invisible monitors. Each desktop can have its own set of apps but shortcuts and wallpaper are consistent across the board.
 
Windows Key+Ctrl+D — create a new virtual desktop.
Windows Key+Ctrl+Left — scroll through your desktops to the left.
Windows Key+Ctrl+Right — scroll through your desktops to the right.
Windows Key+Ctrl+F4 — close the current desktop.
Windows Key+Tab — see all your desktops (and open apps!) via the Task View page.

Cortana and settings


As you’ll know by now, Cortana has arrived on the desktop. If you don’t feel entirely comfortable shouting out “hey Cortana!” across a crowded room, then there are keyboard shortcuts that can help—once Cortana is active, you can choice voice or keyboard input.

Windows Key+Q — open up Cortana ready for voice input.
Windows Key+S — open up Cortana ready for typed input.
Windows Key+I — open up the Windows 10 settings pane.
Windows Key+A — open up Windows 10 notifications (Action Center).
Windows Key+X — open the Start button context menu (the one with easy access to a host of common computer management features—like the Command Prompt below).

Command prompt


The new Windows 10 command prompt gets new keyboard shortcuts as well. To use them, right-click on the command prompt title bar and choose Properties. On the Options tab, untick Use legacy console and enable Ctrl key shortcuts as well as the two text selection options.
Shift+Left — highlight text to the left of the cursor.
Shift+Right — highlight text to the left of the cursor.
Ctrl+Shift+Left (or Right) highlight blocks of text instead of just characters at a time.
Ctrl+C — copy selected text to the Windows clipboard.
Ctrl+V — paste text from the Windows clipboard into command prompt.
Ctrl+A — select all text after the prompt.
These work in other text-based applications as well, but they’re new to Command Prompt.

Finding your way around


Besides all the new Windows 10 keyboard shortcuts, there are plenty of old classics that have survived successive versions of the operating system and are still going strong. Here are the combinations you’re going to need to navigate around the interface.

Windows Key+, — temporarily hide apps to briefly show the desktop.
Windows Key+D — minimize apps to go straight to the desktop.
Ctrl+Shift+M restore all minimized windows to full-size (useful after a Win + D)
Windows Key+Home — minimize all windows except the one you’re actively using
Windows Key+L — lock your PC and go to the lock screen.
Windows Key+E — launch File Explorer (aka Windows Explorer).
Alt+Up — go up one level in File Explorer.
Alt+Left — go to the previous folder in File Explorer.
Alt+Right — go to the next folder in File Explorer.
Alt+Tab switch between windows. (Hold down Alt while tapping Tab to pick visually).
Alt+F4 close the current window.
Windows Key+Shift+Left (or Right) move a window to your next monitor.
Windows Key+T — cycle through taskbar items (hit Enter to launch).
Windows Key+Any Number Key — open the app pinned to the taskbar in the numbered position (e.g. Win+2 launches the app in your second taskbar slot)

Going deeper into Windows


Unlock parts of Windows you never knew existed: Here are the shortcuts you need if you want to go way beyond the surface of the software into settings and options that would otherwise be difficult to find. Don’t click on anything unless you know what you’re doing.

Ctrl+Shift+Esc — open the Windows 10 Task Manager.
Windows Key+R — open the Run dialog box.
Shift+Delete — delete files without sending them to the Recycle Bin.
Alt+Enter — show the properties of the currently selected file.
Windows Key+U — open the Ease of Access Center.
Windows Key+Space — switch input language and keyboard.
Windows Key+Shift+Any Number Key — launch a new instance of the app in the numbered taskbar slot
Windows Key+Ctrl+Shift+Any Number Key same, but launch the app with admin powers enabled

Pictures, video and display


As you would expect, Windows 10 is a very visual OS and there are keyboard shortcuts to help you capture screenshots, record on-screen activity and zoom in and out. Note that to use the Game DVR recorder app you’re going to need a decent graphics setup installed.

Windows Key+PrtScr — take a screenshot saved to your Pictures folder.
Windows Key+G — open the Game DVR recorder (if supported by your graphics card).
Windows Key+Alt+G — start recording activity in the current window.
Windows Key+Alt+R — stop recording in the Game DVR.
Windows Key+P — switch between display modes (with a secondary display connected).
Windows Key+plus — zoom in using the Magnifier utility.
Windows Key+minus — zoom out using the Magnifier utility.

Find even more obscure keyboard shorts at this link.

 

Monday, February 29, 2016

Samsung Will Focus on Mid-Range and Budget Smartphones in 2016


Samsung Will Focus on Mid-Range and Budget Smartphones in 2016:- Report


Samsung Galaxy A7


 





 




Samsung has realigned its focus towards mid-range and budget smartphones, according to a report quoting an unnamed company official. The official added the South Korean tech giant will be lowering its smartphone shipments by as much as 12 percent in 2016.

Speaking with Korea Times, another unnamed official is quoted to say the 12 percent cut by Samsung means that it is planning to ship around 420 million to 430 million units next year. "This is more about adjustments to changing market environment," he said,
 This also means that users can expect some big announcements in the mid-range Galaxy A and low-end Galaxy J series. It is worth mentioning that Bernstein Research in a note to investors also said that, "The mid-end A-series and low-end J-Series posted a strong shipment growth. We had doubts that Samsung had a competitive advantage in this mid- and low-end segment, but the actual volume was a surprise."

 In addition, an official is quoted to say the upcoming Galaxy S7 smartphone will be accompanied by an Edge model as the "curved models are receiving a better response."

 "With its display affiliate of Samsung Display improving production yields of curved mobile panels, S7 sales prospects seem solid and this will help Samsung maintain its global share next year," the company official was quoted to say.

On a related note, Samsung on Thursday launched its Galaxy A9 smartphone in China. The South Korean tech giant is yet to reveal the pricing and availability details of the smartphone. The Android 5.1.1 Lollipop-based Samsung Galaxy A9 falls in the company's premium lineup of smartphones and features more powerful innards under-the-hood as compared to the recently launched Samsung Galaxy A3 (2016), Galaxy A5 (2016), and the Galaxy A7 (2016).

Concern Grows in US Over China's Drive to Make

Concern Grows in US Over China's Drive to Make Chips





































China is spending billions of dollars on a major push to make its own microchips, an effort that could bolster its military capabilities as well as its homegrown technology industry.

Those ambitions are starting to get noticed in Washington.

Worries over China's chip ambitions were the main reason US officials blocked the proposed purchase for as much as $2.9 billion (roughly Rs. 19,607 crores) of a controlling stake in a unit of the Dutch electronics company Philips by Chinese investors, according to one expert and a second person involved with the deal discussions.

 The rare blockage underscores growing concern in Washington about Chinese efforts to acquire the know-how to make the semiconductors that work as the brains of all kinds of sophisticated electronics, including military applications such as missile systems.

 In the case of the Philips deal, the company said late last month that it would terminate a March 2015 agreement to sell a majority stake in its auto and light-emitting diode components business known as Lumileds to a group that included the Chinese investors GO Scale Capital and GSR Ventures. It cited concerns raised by the Committee on Foreign Investment in the United States, which reviews whether foreign investments in the country present a national security risk.

 Philips said that despite efforts to alleviate concerns, the committee - known as CFIUS - did not approve the transaction.


"There is a belief in the CFIUS community that China has become innately hostile and that these aren't just business deals anymore," said James Lewis, a senior fellow at the Center for Strategic and International Studies, a research firm.

Philips did not respond to requests for comment. GSR Ventures, which sponsors GO Scale Capital, declined to comment.

CFIUS, an interagency body that includes representatives from the Treasury and Justice departments, declined to comment.

At the center of the committee's concerns on the Philips deal, according to Lewis, was a little known but increasingly important advanced semiconductor material called gallium nitride. Gallium nitride, often referred to by its abbreviation GaN, could be used to construct a new generation of powerful and versatile microchips.

 Read more...

 © 2016 New York Times News Service

Bangladesh country profile

Bangladesh country profile

 

 

 

 

 

 

 
 

 

Bangladesh is one of the world's most densely populated countries, with its people crammed into a delta of rivers that empties into the Bay of Bengal. 

Poverty is deep and widespread, but Bangladesh has in recent years reduced population growth and improved health and education.

Formerly East Pakistan, Bangladesh came into being only in 1971, when the two parts of Pakistan split after a bitter war which drew in neighbouring India.

Bangladesh spent 15 years under military rule and, although democracy was restored in 1990, the political scene remains volatile.

Islamist extremism has been rising in the usually tolerant country.

The low-lying country is vulnerable to flooding and cyclones, and stands to be badly affected by any rises in sea levels.

People's Republic of Bangladesh

Capital: Dhaka

  • Population 152.4 million
  • Area 143,998 sq km (55,598 sq miles)
  • Major language Bengali
  • Major religion Islam, Hinduism
  • Life expectancy 69 years (men), 70 years (women)
  • Currency- Taka
      

President: Abdul Hamid
Abdul Hamid, formerly the Speaker of parliament, was elected unopposed to the ceremonial post in 2013.

 

 

 

 

Prime minister: Sheikh Hasina